সাতক্ষীরায় চাষিরা ঘূর্ণিঝড় মোখার আতঙ্কে গাছের আম পেড়ে ফেলছেন

সাতক্ষীরা জেলার চাষিরা ঘূর্ণিঝড় মোখার আতঙ্কে গাছের আম পেড়ে ফেলছেন। ফলে দুই দিনের ব্যবধানে বাজারে আমের মূল্য অর্ধেকে নেমে এসেছে।

 

সাতক্ষীরায় চাষিরা ঘূর্ণিঝড় মোখার আতঙ্কে গাছের আম পেড়ে ফেলছেন

 

ঘূর্ণিঝড় মোখার আতঙ্কে গাছের আম পড়ে যাবে এই আশংকায় আমচাষিরা সব আম পেড়ে ফেলছেন। এর ফলে বাজারে আমের মূল্য অর্ধেকে নেমে এসেছে।

কৃষি বিভাগের ধারণা, শুক্রবার পর্যন্ত সাতক্ষীরা জেলায় মোখার আঘাত হানার আশঙ্কা নেই। এ বিষয়ে তারা প্রচার-প্রচারণাও চালিয়েছে। কিন্তু আম পাড়া বন্ধ করতে পারছে না।

আমচাষি মো. কবিরুল ইসলাম জানান, গত বছর আম চাষে তেমন লাভে হয়নি। চলতি মৌসুমে আম ভালো হয়েছে।

আমচাষিরা আশা করেছিলেন গত মৌসুমের লোকসান এবার তারা এ বছর কাটিয়ে উঠতে পারবেন । কিন্তু এপ্রিল মাসের শেষের দিকে আকস্মিক ঝড়ে বিপুল পরিমাণে কাঁচা আম পড়ে যায়। এখন আবার ঘূর্ণিঝড় মোখার আতঙ্ক। এ কারণে  সব চাষি আম পেড়ে ফেলছেন। বাজারে একসঙ্গে বিপুল পরিমাণ আম ওঠায় অর্ধেকে নেমে এসেছে দাম। এতে তাঁরা লোকসান গুনছেন।

 

সাতক্ষীরায় চাষিরা ঘূর্ণিঝড় মোখার আতঙ্কে গাছের আম পেড়ে ফেলছেন

 

আমচাষিরা আশা করেছিলেন এ বছর আমের ফলন বেশি হওয়ায় তারা এ বছর কিছুটা হলেও লাভের মুখ দেখতে পারবে কিন্তু ঘূর্ণিঝড় মোখার কারনে এবারও তারা লোকসান গুনছেন।

জানা যায়, সাতক্ষীরার ৭টি উপজেলায় ৪ হাজার ১১৫ হেক্টর জমিতে আমবাগানের সংখ্যা ৫ হাজার ২৯৯টি। জেলায় আমচাষির সংখ্যা ১৩ হাজার ১০০। চলতি মৌসুমে আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৫ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন।

প্রথম ধাপে ৫ মে থেকে গোবিন্দভোগ ও গোপালভোগ পাড়া ও বাজারজাত শুরু হয়। দ্বিতীয় ধাপে ১২ মে থেকে হিমসাগর আম পাড়া ও বাজারজাত শুরু হয়েছে। তৃতীয় ধাপে ১৮ মে ল্যাংড়া ও চতুর্থ ধাপে ২৮ মে আম্রপালি আম সংগ্রহ শুরু করার কথা।

 

সাতক্ষীরায় চাষিরা ঘূর্ণিঝড় মোখার আতঙ্কে গাছের আম পেড়ে ফেলছেন

 

তিনি জানান , এ বছর গাছে অনেক আম হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূল থাকলে চলতি বছর ৭-৮ লাখ টাকা লাভ করতে পারবেন বলে ভেবেছিলেন। ঘূর্ণিঝড় মোখার আতঙ্কে দুই দিন ধরে আম পেড়ে বাজারজাত করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু বাজারে বিপুল পরিমাণ আম ওঠায় দাম অর্ধেকে নেমে এসেছে। দুই দিন আগে যে আম দুই হাজার টাকা মণ বিক্রি করেছেন, তা আজ (শুক্রবার) বিক্রি হয়েছে এক হাজার টাকা মণ দরে।

আমচাষি আনিসুর রহমান বলেন, ২৭টি বাগানে তাঁর খরচ হয়েছে প্রায় ২৭ লাখ টাকা। বিপুল পরিমাণ আম হওয়ায় ১০-১২ লাখ টাকা লাভের আশা করেছিলেন। ঘূর্ণিঝড়ের আতঙ্কে সব আম পেড়ে বিক্রি করছেন। কিন্তু বাজারে দর পাচ্ছেন না। এখন লাভ হওয়া তো দূরের কথা, আসল টাকা উঠলেই স্বস্তি পাবেন তিনি।

ঘূর্ণিঝড় মোখার আতঙ্কে চাষিরা আম পেড়ে ফেলতে পারেন, এমন আশঙ্কায় গতকাল (বৃহস্পতিবার) সমন্বয় সভা করেছেন বলে জানিয়েছেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শেখ মনিরুল ইসলাম।

 

google news
গুগোল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

তিনি বলেন, আবহাওয়া অধিদপ্তরের প্রতিবেদন অনুযায়ী সাতক্ষীরা জেলায় ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার আশঙ্কা নেই বললেই চলে। একই বার্তা আমচাষিদের দেওয়া হয়েছে। কিন্তু চাষিরা ঘূর্ণিঝড়ের আতঙ্কে সব আম পেড়ে বিক্রি করছেন।

শেখ মনিরুল ইসলাম আরও বলেন, ভালো আমের দাম খুব একটা কমেনি আজ সাতক্ষীরা শহরের সুলতানপুর বড়বাজারের গিয়ে দেখেন, চাহিদার তুলনায় কয়েক গুণ আম উঠেছে। ফলে এসব আমের মূল্য অর্ধেকে নেমে এসেছে।

আরও দেখুনঃ

২ thoughts on “সাতক্ষীরায় চাষিরা ঘূর্ণিঝড় মোখার আতঙ্কে গাছের আম পেড়ে ফেলছেন”

Leave a Comment